ঘৃতকুমারী

aloe-vera

ঘৃতকুমারী
এর বৈজ্ঞানিক নাম Aloe vera এটি Asphodelaceae (Aloe family) পরিবারের একটি উদ্ভিদ অন্যান্য নামের মধ্যে এলোভেরা, Aloe vera, Medicinal aloe, Burn plant Hindi: Gheekumari উল্লেখযোগ্য
ঘৃতকুমারী বহুজীবি ভেষজ উদ্ভিদ এবং দেখতে অনেকটা আনারস গাছের মত। এর পাতাগুলি পুরু, দুধারে করাতের মত কাঁটা এবং ভেতরে লালার মত পিচ্ছিল শাঁস থাকে। সবরকম জমিতেই ঘৃতকুমারী চাষ সম্ভব তবে দোঁয়াস অল্প বালি মিশ্রিত মাটিতে গাছের বৃদ্ধি ভালো হয় নিয়মিত জলসেচের দরকার হলেও গাছের গোড়ায় যাতে জল থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সাধারণতঃ শেকড় থেকে বেরনো ডাল বাসাকার’-এর সাহায্যে এই গাছের বংশবৃদ্ধি হয়
এই ঘৃতকুমারীতে রয়ছে ২০ রকমের খনিজ। মানবদেহের জন্য যে ২২টা এমিনো এসিড প্রয়োজন তার টি এতে বিদ্যমান। এছাড়াও ভিটামিন A, B1, B2, B6, B12, C এবং E রয়েছে
ব্যবহার্য অংশ
পাতা, শাঁস
মিসরীয় লোককাহিনী থেকে জানা যায়, সৌন্দর্যবর্ধন করে যে প্রকৃতিকন্যা তার লাতিন নাম এলোভেরা ওরফে ঘৃতকুমারী এর বৈজ্ঞানিক নাম Aloe vera এটি Asphodelaceae (Aloe family) পরিবারের একটি উদ্ভিদ অন্যান্য নামের মধ্যে Aloe vera, Medicinal aloe, Burn plant Hindi: Gheekumari উল্লেখযোগ্য
ঘৃতকুমারী বহুজীবি ভেষজ উদ্ভিদ এবং দেখতে অনেকটা আনারস গাছের মত। এর পাতাগুলি পুরু, দুধারে করাতের মত কাঁটা এবং ভেতরে লালার মত পিচ্ছিল
শাঁস থাকে। সবরকম জমিতেই ঘৃতকুমারী চাষ সম্ভব তবে দোঁয়াস অল্প বালি মিশ্রিত মাটিতে গাছের বৃদ্ধি ভালো হয় নিয়মিত পানিসেচের দরকার হলেও গাছের গোড়ায় যাতে পানি থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সাধারণতঃ শেকড় থেকে বেরনো ডাল বাসাকার’-এর সাহায্যে এই গাছের বংশবৃদ্ধি হয়। ইউনানী শাস্ত্রে শুকনো চূর্ণকৃত ঘৃতকুমারীর নাম হল মুসাওওয়ার।
এই ঘৃতকুমারীতে রয়ছে ২০ রকমের খনিজ। মানবদেহের জন্য যে ২২টা এমিনো এসিড প্রয়োজন তার টি এতে বিদ্যমান। এছাড়াও ভিটামিন A, B1, B2, B6, B12, C এবং E রয়েছে
ব্যবহার্য অংশ: – পাতা, শাঁস
অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারীর রসের কয়েকটি ঔষধি গুণ
  • হজমি সহায়ক: নিয়মিত ঘৃতকুমারীর রস পানে পরিপাক প্রক্রিয়া সহজ হয়। ফলে দেহের পরিপাকতন্ত্র সতেজ থাকে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। তাছাড়া ডায়েরিয়া সারাতেও ঘৃতকুমারীর রস দারুণ কাজ করে
  • শক্তিবর্ধক: আমাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় এমন কিছু উপাদান থাকে যা দেহে ক্লান্তি শ্রান্তি আনে। কিন্তু নিয়মিত ঘৃতকুমারীর রস সেবন শরীরের শক্তি যোগানসহ ওজনকে ঠিক রাখতে সাহায্য করে
  • রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: যারা দীর্ঘকাল ফিব্রোমিয়ালজিয়ার মতো সমস্যায় ভুগছেন তাদের ক্ষেত্রে ঘৃতকুমারীর রস দারুণ কাজ করে। এটি দেহে সাদা ব্লাড সেল গঠন করে যা ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে
  • ক্ষতিকর পদার্থের অপসারণ: দেহ থেকে ক্ষতিকর পদার্থ অপসারণে ঘৃতকুমারীর রস একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক ঔষধির কাজ করে। আমরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন চাপে থাকি। এছাড়া চারপাশের দূষিত পরিবেশ এবং বিভিন্ন ফাস্টফুড গ্রহণের কারণে নিয়মিত পরিপাকতন্ত্র পরিষ্কার করা দরকার। ঘৃতকুমারীর রস সেবনের ফলে শরীরে বিভিন্ন ভিটামিনের মিশ্রণ খনিজ পদার্থ তৈরি হয় যা আমাদেরকে চাপমুক্ত রাখতে এবং শক্তি যোগাতে সাহায্য করে
  • প্রদাহ কমায়: ঘৃতকুমারীর রস হাড়ের সন্ধিকে সহজ করে এবং দেহে নতুন কোষ তৈরি করে। এছাড়া হাড় মাংশপেশির জোড়াগুলোকে শক্তিশালী করে। সেইসঙ্গে শরীরের বিভিন্ন প্রদাহ প্রশমনেও কাজ করে
  • ঘৃতকুমারী পাতার রস , শসা মধু: ঘৃতকুমারী পাতার রস বিষাক্ত উপাদানের প্রতি বিশেষ ভুমিকা পালন করতে পারে জন্য চেহারা মেচেতার ওপর কিছু ঘৃতকুমারী পাতার রস রেখে দেয়, চেহারার ত্বকের নরম হবে এবং কিছু ক্ষতচিহ্ন দেখা যায় না যদি আপনার মুখের মেচেতা খুব গুরুতর , তাহলে ঘৃতকুমারী পাতার রস পানির সঙ্গে মিশিয়ে খান, প্রতিদিন দুবার ,প্রত্যেকবার ১০ মিলিলিটার ,কার্যকরভাবে মেচেতা প্রতিরোধ করা যায় ঘৃতকুমারীর একটি পাতা, মধু একটি ছোট শসা ছোট করে মিশিয়ে করে মাস্ক করে এবং মেচেতার ওপর রেখে দেন, চামরার ফুস্কুড়িও প্রতিরোধ করতে পারে উল্লেখ যে, নারীদের মুখে যদি মেচেতা থাকে, তাহলে মেক-আপ না করা ভালো কারণ যেসব মেক-আপ ক্রিম ত্বকের সূক্ষ্মরন্ধ্রের স্বাভাবিক রূপান্তর বাধা দেবে এবং মুখের মেচেতা গুরুতর হবে
  • শুক্রমেহেঃ- প্রধানতঃ যারা শ্লেষ্মাপ্রধান রোগে ভোগেন তাদেরই রোগ বেশী হয়। কোঁত দিলে অথবা প্রস্রাব করলে শুক্রস্খলন হয়, এই সব লোকের ঠান্ডা জিনিসের প্রতি আকর্ষণ বেশী দেখা যায়, শুধু এই ক্ষেত্রেই ঘৃতকুমারীর শাঁস গ্রাম একটু চিনি মিশিয়ে সকালে বা বিকালে সরবত করে খেতে হবে। অথবা শুধু চিনি মিশিয়েও খাওয়া যায়। / দিন খেতে হবে
  • গুল্ম রোগে:- গর্ভ হলে পেটে ব্যথা হয়না, আর গুল্মে প্রায়ই কনকনে ব্যথা হয়। তবে এটা যে গুল্ম তা নিশ্চিত হতে হবে। তাহলে ঘৃতকুমারীর শাঁস / গ্রাম একটু চিনি দিয়ে সরবত করে / দিন খেতে হবে
  • সামান্য উত্তেজনায় ধাতু/শুক্রাণু স্খলন: যাদের শুক্রাণু পাতলা তাদের জন্য দুই চামচ চটকানো ঘৃতকুমারী পাতার শাষ এবং দুই চামচ চিনি মিশিয়ে শরবত করে ১৫-২০ দিন খেলে পাতলা শুক্রাণু অকারণে স্খলন বন্ধ হবে
  • কোমরে ব্যথা হলে শাঁস অল্প একটু গরম করে মালিশ করলে আরাম পাওয়া যায়
  • মুখ এবং ত্বকের দাগ দূর করতে এলোভেরা বাহ্যিক এবং অভ্যন্তরিন দুইভাবেই কাজ করে বাহ্যিকভাবে বলতে ত্বকের উপরিভাগে এর প্রয়োগ বুঝায় এলোভেরার শাস সেবন করাই অভ্যন্তরিন ব্যবহার আসুন কিভাবে সঠিকভাবে এটি ব্যবহার করতে হবে তা জেনে নিই
    এলোভেরার টনিক:
    এলাভেরার টনিক বানাতে হলে আপনাকে এলোভেরার কচিপাতা যোগার করতে হবে এজন্য আপনি স্থানীয় বাজার থেকে সংগ্রহ করতে পারেন, অথবা বাড়িতেই টবে লাগাতে পারেন এলোভেরার চারা শুষ্ক অঞ্চলের গাছ হওয়ায় এলোভেরার তেমন যত্ন করার প্রয়োজন নেই যাই হোক একটি সতেজ পাতা কেটে নিয়ে পরিস্কার করে দুইভাগ করুন এরপর ভেতরের জেলির মতো শাসগুলো চামচ দিয়ে গ্লাসে ঢেলে নিন এবার পানি চিনি মিশিয়ে তৈরী করুন এলোভেরার টনিক এর ঝাঁঝালো গন্ধ দূর করতে এর সাথে একটু ট্যাং মেশাতে পারেন এই টনিক প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে পান করলে, প্রাকৃতিক ভাবেই পেতে পারেন দাগহীন ত্বক ব্রণ এবং সানবার্ণ থেকেও এটি আপনাকে মুক্তি দেবে
    ত্বকের দাগ দূর করতে:
    এলোভেরার শাস বা জেল ত্বকের যেসব জায়গায় দাগ আছে, সেখানে সরাসরি প্রয়োগ করতে পারেন রাতে ঘুমাবার আগে ত্বকের দাগগুলোতে জেলের মতো করে এলোভেরার শাস লাগান সকালে উঠে যে কোন ফেসওয়াস দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন
  • ঘৃতকুমারীর একটি পাতা, মধু একটি ছোট শসা ছোট করে মিশিয়ে করে মাস্ক করে
    এবং মেচেতার ওপর রেখে দেন, চামরার ফুস্কুড়িও প্রতিরোধ করতে পারে
  • উল্লেখ যে, নারীদের মুখে যদি মেচেতা থাকে, তাহলে মেক-আপ না করা ভালো কারণ
    যেসব মেক-আপ ক্রিম ত্বকের সূক্ষ্মরন্ধ্রের স্বাভাবিক রূপান্তর বাধা দেবে
    এবং মুখের মেচেতা গুরুতর হবে
  • ঘৃতকুমারী শাঁস চামচ চামচ মিছরি একসঙ্গে সেবন করলে শরীরে
    উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়৷
  • একজিমা ঘৃতকুমারী শাঁস প্রতিদিন নিময়ম করে কয়েক সপ্তাহ লাগালে চুলকানি
    খেকে আরাম পাওয়া যায়৷
  • অনিয়মিত এবং অস্বাভাবিক মাজুরতা (মাসিক) হলে: ঘৃতকুমারী পাতার শাষকে ভালভাবে চটকে চালুনীতে/ঝাকীতে পাতলা আবরণ করে একবার শুকানোর পর আরেকবার তার উপরেই পাতলা আবরণ লাগাতে হবে। এভাবে কয়েকবার লাগানোর পরেই আমসত্বের মতো তৈরি হবে। মাসিকের সময় / গ্রাম পরিমাণ পানিতে ভিজিয়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেতে হবে
  • পেটের ইস্তিজ্ঞা (মল) পরিষ্কার করতে: যখন সমস্যা হবে তখন সকালে খালি পেটে টাটকা ঘৃতকুমারী পাতার শাষ ১০/১৫ গ্রামের মতো ঠান্ডা পানিরসাথে হালকা চিনি মিশিয়ে শরবত করে খেলে পুরানো ইস্তিজ্ঞা পরিষ্কার হবে
  • অর্শরোগে: রোগের স্বভাবধর্ম কোষ্ঠ কাঠিন্য হওয়া। সেটা থাকুক আর নাই থাকুক, ক্ষেত্রে ঘৃতকুমারীর শাঁস / গ্রাম মাত্রায় একটু ঘি দিয়ে মিশিয়ে সকালে বিকালে দুই বার খেতে হবে। এর দ্বারা দাস্ত পরিষ্কার হবে এবং অর্শেরও উপকার হবে
  • চুলের জত্নে: ঘৃতকুমারী চুলের উজ্জলতা বাড়াতে কন্ডিশনারের কাজ করে। এছাড়া চুল পড়া রোধ এবং খুশকি প্রতিরোধে অসাধারণ অ্যালোভেরা। খুশকি দূর করতে মেহেদিপাতার সঙ্গে অ্যালোভেরা মিশিয়ে লাগাতে পারেন চুলে। মাথা যদি সব সময় গরম থাকে তাহলে পাতার শাঁস প্রতিদিন একবার তালুতে নিয়ম করে লাগালে মাথা ঠাণ্ডা হয়৷ অ্যালোভেরার রস মাথার তালুতে ঘষে এক ঘণ্টা রেখে ধুয়ে ফেলুন। চুল পড়া বন্ধ হবে এবং নতুন চুল গজাবে। শ্যাম্পু করার আগে আধা ঘণ্টা অ্যালোভেরার রস পুরো চুলে লাগিয়ে রাখুন। এতে চুল ঝরঝরা উজ্জ্বল হবে।কন্ডিশনার হিসাবে ব্যবহার করার নিয়ম: প্রথম একটি ধারালো ছুরি দিয়ে প্রতিটি গাছের পাতা থেকে পুরু সবুজ চামড়া সরিয়ে পাতার ভেতরের পরিষ্কার জেলি যতটা সম্ভব বের করে নিতে হবে। আস্তরণটি কাটার সময় সতর্ক থাকুন যেন জেলি কাটা অংশের সাথে পরে না যায়।ব্লেন্ডারে এই জেলি নিয়ে ভাল করে ব্লেন্ড করুন, পানি দেবার দরকার নেই। বের করার আগে দেখুন যেন সবটুকু জেলি খুব ভাল ভাবে ব্লেন্ড হয়।এবার এই মিশ্রণটি ভাল করে ছেঁকে নিন। জেলি ছেঁকে নেবার পর যেন তা এর মধ্যের সাদা অংশ থেকে আলাদা হয়ে আসে।এবার চুলে শ্যাম্পুর পরে চুলের আগা থেকে গোঁড়া পর্যন্ত এই জেলি ভাল করে ম্যাসাজ করে মেখে নিন। চাইলে অন্য কোন কন্ডিশনারের সঙ্গে মিশিয়েও এটি ব্যবহার করতে পারেন
  • রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় যারা দীর্ঘকাল ফিব্রোমিয়ালজিয়ার মতো সমস্যায় ভুগছেন তাদের ক্ষেত্রে ঘৃতকুমারীর রস দারুণ কাজ করে এটি দেহে সাদা ব্লাড সেল গঠন করে যা ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে
  • ঘৃতকুমারী বা অ্যালোভেরা গাছের নির্যাস পেটের গ্যাস এবং গ্যাসট্রিক কমায়। এটি সাধারণত জুস আকারে গ্রহণ করা হয়। তবে মনে রাখতে হবে, এটি ঘুম ঘুম ভাব আনে। তাই সতর্কতার সঙ্গে গ্রহণ করতে হবে এবং মাত্রাতিরিক্ত গ্রহণ করা যাবে না।
·         চুল: খুশকি দূর করতে মেহেদিপাতার সঙ্গে অ্যালোভেরা মিশিয়ে লাগাতে পারেন চুলে মাথা যদি সব সময় গরম থাকে তাহলে পাতার শাঁস প্রতিদিন একবার তালুতে নিয়ম করে লাগালে মাথা ঠাণ্ডা হয় অ্যালোভেরার রস মাথার তালুতে ঘষে এক ঘণ্টা রেখে ধুয়ে ফেলুন চুল পড়া বন্ধ হবে এবং নতুন চুল গজাবে শ্যাম্পু করার আগে আধা ঘণ্টা অ্যালোভেরার রস পুরো চুলে লাগিয়ে রাখুন শ্যাম্পু করার পর চুল থেকে হাত সরাতেই মন চাইবে না
ঘৃতকুমারী শরীরের ভীতরে যেমন কাজ করে তেমনী শরীরের উপরে ত্বক লাবন্যের রুপ চর্জায় বিশেষ কাজ করে

চুলের রুক্ষতা দূর করতে ঘৃতকুমারী

অতিরিক্ত রুক্ষ চুল থেকে রেহাই পেতে অনেকেই রঙ-চঙে বিজ্ঞাপনের পাল্লায় পড়ে ব্যবহার করেন নামি দামী ব্র্যান্ডের হেয়ার প্রোডাক্ট আবার অনেকে শরণাপন্ন হন ডাক্তারের, কেউ যান পার্লারে কিন্তু এত ঝামেলায় না গিয়ে বাসায় বসে একটু সময় বের করেই আপনি চুলের রুক্ষতা দূর করতে পারেন তাও আবার সামান্য ঘরোয়া জিনিষপত্র দিয়েই কি, বিশ্বাস হচ্ছে না? তবে চলুন দেখে নেই চুলকে রেশমের মত মোলায়েম করে তোলার সহজ একটি হেয়ার মাস্ক
অ্যালোভেরা (ঘৃতকুমারী) হেয়ার মাস্ক
অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারী খুব ভালো একটি ময়েসচারাইজার যা শুধুমাত্র ত্বকের শুষ্কতা রুক্ষতাই নয়, দূর করে চুলের রুক্ষতাও অ্যালোভেরার ব্যবহার চুলের রুক্ষতা দূর করে চুলকে করবে মসৃণ, কোমল উজ্জ্বল
এই মাস্কটি তৈরি করতে আপনার লাগবে / টেবিল চা চামচ ঘৃতকুমারী জেল, দেড় টেবিল চামচ নারকেল তেল টেবিল চামচ টক দই। চুলের ঘনত্ব লম্বা অনুযায়ী পরিমাণ কম বা বেশি হতে পারে
একটি পাত্রে সকল উপাদান একসাথে নিয়ে খুব ভালো করে মিশিয়ে নিন। এরপর এই মিশ্রণটি চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত লাগিয়ে নিন ভালো করে। ২০-৩০ মিনিট চুলে লাগিয়ে রাখুন মিশ্রণটি। এরপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এবং একটি মৃদু শ্যাম্পু ব্যবহার করে চুল ধুয়ে নিন। প্রথম ব্যবহারেই পার্থক্য বুঝতে পারবেন! সপ্তাহে বার এই মাস্কটি ব্যবহার করুন ভালো ফলাফল পেতে
ঘৃতকুমারীর পাতা থেকে জেল বের করার নিয়ম
বাসায় ঘৃতকুমারীর পাতা থেকে খুব সহজেই জেল বের করে নিতে পারেন। প্রতিবার তাজা পাতা ব্যবহার করলে ফলাফল বেশি পাওয়া যাবে কিন্তু প্রয়োজনে এটা সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন পরবর্তীতে ব্যবহারের জন্য
:: একটি ঘৃতকুমারী পাতা নিয়ে এর গোড়ার দিকের অংশ কেটে নিন। এরপর কাটা অংশটি নিচের দিকে ধরে রাখুন
:: এতে করে পাতা থেকে হলদেটে একটি রস বের হবে। এই রসটি পুরোপুরি বের না হওয়া পর্যন্ত এভাবেই ধরে রাখুন। তারপর হলদেটে রসটি ফেলে দিন
:: হলদেটে রস পড়া বন্ধ হলে পাতাটি ভালো করে ধুয়ে নিন। এরপর পাতার দুইদিকের কাঁটা ভরা অংশ কেটে ফেলে দিন
:: কাঁটা ফেলে দেবার পর পাতার সবুজ অংশ চেঁছে ফেলে দিন ভেতরের স্বচ্ছ জেলের মত অংশ সংরক্ষণ করুন। এটাই ঘৃতকুমারী বা অ্যালোভেরা জেল, যা আপনি ফেসপ্যাকে ব্যবহার করতে পারবেন

মাটি জলবায়ু : সবরকম জমিতেই ঘৃতকুমারী চাষ সম্ভব; তবে দোঁ-আশ অল্প বালু মিশ্রিত মাটিতে গাছের বৃদ্ধি ভালো হয় সুনিষ্কাশিত জমি যেসব জমিতে পানি জমে না এরূপ উঁচু জমিতে ঘৃতকুমারীর চাষ করা যায় তবে লবণাক্ত চরম অম্লীয় মাটিতে ভালো হয় না নিচু পানি জমা জমিতে গাছ পচে যায় যেকোনো দোআঁশ মাটিতে চাষ ভালো হয় তবে বেলে দোআঁশ মাটি উত্তম এঁটেল মাটিতে চাষ না করা ভালো ছায়া জায়গায় হবে না, ঘৃতকুমারীর জন্য দরকার সারা দিন রোদ

জমি তৈরি : ঘৃতকুমারী চাষ করতে হলে জমি প্রথমে ভালোভাবে পরিষ্কার করে চাষ দিতে হবে চাষের সময় হেক্টরপ্রতি ১০ থেকে ১২ টন গোবর মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে ছাড়া সময় হেক্টরপ্রতি ২২৫ থেকে ২৫০ কেজি টিএসপি ৭৫ থেকে ১০০ কেজি এমওপি সার দিতে হবে নাটোরের অ্যালোভেরা চাষিরা সাধারণত বেশি করে গোবর সার দিয়ে এর চাষ করেন, খুব কম চাষিই রাসায়নিক সার দেন অনেক চাষি প্রচুর ছাই ব্যবহার করে থাকেন তবে কেউ কেউ বিঘাপ্রতি ২৫ থেকে ৩০ কেজি টিএসপি এবং ১০ কেজি এমওপি সার জমি প্রস্তুতের সময় ব্যবহার করেন সার মেশানোর পর জমিতে চারা লাগানোর জন্য বেড তৈরি করতে হবে বেড হবে . থেকে .২৫ মিটার চওড়া প্রতি দুই বেডের মাঝে ৪০ থেকে ৫০ সেন্টিমিটার নালা রাখতে হবে
চারা রোপণ
ঘৃতকুমারীর তিন রকম চারা লাগানো হয়Ñ রুট সাকার বা মোথা,গাছের গোড়া থেকে গজানো চারা গাছের গোড়ার অংশ কেটে ফেলে পুরো গাছ বাণিজ্যিকভাবে রুট সাকার লাগানো লাভজনক নয় বিধায় এটি লাগানো হয় না পুরনো গাছের গোড়া থেকে গজানো চারা মাতৃগাছ থেকে আলাদা করে প্রথমে একখণ্ড জমিতে বা বেডে লাগানো হয় সেখানে এসব চারা দুই থেকে তিন মাস লালন পালন করে বড় করা হয় পরে মূল জমি চাষ দিয়ে এসব চারা তুলে সেখানে লাগানো হয় এতে চারার প্রতিষ্ঠা ভালো হয় তবে এরূপ চারা লাগিয়ে পাতা তোলার জন্য ছয় মাস অপেক্ষা করতে হয় তাই বাণিজ্যিক চাষের জন্য এরূপ চারা লাগানোর চেয়ে মোথা কেটে বাদ দিয়ে সরাসরি পুরনো  গাছ লাগাতে বেশি পছন্দ করে থাকেন এতে দ্রুত পাতা তোলা যায় রকম গাছ লাগানোর তিন মাসের মাথায় পাতা তোলা যায় অনেক দিন জমিতে থাকার পর একই গাছ থেকে উপর্যুপরি পাতা তোলার পর গাছের গোড়া যখন লম্বা হয়ে যায় এবং গাছ যখন খাড়া থাকতে পারে না, তখন গাছ কেটে -৩টি পাতা বাদ দিয়ে সেসব গাছ লাগাতে হবে লাগানো গাছ যেন সুস্থ সবল হয় সে দিক লক্ষ রাখতে হবে
রোপণ সময় : বছরের যেকোনো সময় ঘৃতকুমারীর চারা লাগানো যায় তবে শীত বর্ষাকালে চারা না লাগানো ভালো সাধারণত কার্তিক অগ্রহায়ণ মাসে চারা বেশি লাগানো হয় কেননা সময় চারা লাগালে শীতের মধ্যে গাছ মাটিতে লেগে যাওয়ার চেষ্টা করে শীতের সময় বাজারে অ্যালোভেরার পাতার চাহিদা থাকে না তাই চাষিরা সময় পাতা সংগ্রহ থেকে বিরত থাকেন পক্ষান্তরে এই - মাসের মধ্যে চারা জমিতে ভালোভাবে লেগে যায় শীত শেষে বসন্তে নতুন পাতা ছাড়তে শুরু করলে পাতা সংগ্রহ করা শুরু হয় পদ্ধতিতে চাড়া রোপণ করলে বেশি পাতা পাওয়া যায়
রোপণ দূরত্ব : চারা সারি করে লাগানো হয় সারি থেকে সারির দূরত্ব সাত ইঞ্চি প্রতি সারিতে ছয় ইঞ্চি পর পর চারা লাগানো হয় . মিটার চওড়া বেডে দুই সারিতে .২৫ মিটার চওড়া বেডে তিন সারিতে চারা রোপণ করা হয়
সার সেচ প্রয়োগ : সাধারণত কোনো রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হয় না যদি ইউরিয়া সার দিতে হয় তাহলে বছরে একবার সবটুকু ইউরিয়া সার জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় মাসে জমিতে ছিটিয়ে দিলেই চলে সার ছিটানোর পর আগাছা নিড়িয়ে মাটির সাথে সার মিশিয়ে দিতে হয় বেশি ইউরিয়া সার দিলে  রোগের আক্রমণ প্রকোপ বেড়ে যায় শুষ্ক মওসুমে জমিতে প্রয়োজনমাফিক সেচ দিতে হবে মাঝে মাঝে জমির আগাছা নিড়িয়ে দিতে হবে ঘৃতকুমারী গাছ জমিতে প্রায় দুই বছর থাকে তাই দ্বিতীয় বছরেও প্রথম বছরের মতো একই হারে জমিতে সার সেচ দিতে হবে
বালাই ব্যবস্থাপনা
পাতার দাগ রোগঘৃতকুমারী গাছে পাতায় দাগ পড়া এক প্রধান সমস্যা শীতকালে রোগ কম থাকে কিন্তু শীত শেষে ফাল্গুন মাসে রোগের প্রকোপ বেড়ে যায় এবং পাতার ব্যাপক ক্ষতি হয় রোগের আক্রমণে পাতার অগ্রভাগে আলপিনের মাথার মতো ক্ষুদ্র এক বিন্দুর মতো দাগ পড়ে, সেখান থেকে আঠার মতো কষ বের হয় ওই আঠা শুকিয়ে বাদামি দাগের সৃষ্টি করে এভাবে আক্রান্ত গাছের পাতায় ধীরে ধীরে দাগ বড় হতে থাকে দাগের সংখ্যাও বাড়তে থাকে এটি ধারণা করা হয় ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ, তাই ছত্রাকনাশক প্রয়োগে তেমন ফল পাওয়া যায় না রোগের কারণে পাতার চেহারা নষ্ট হয়ে যায় বাজারমূল্যও কমে যায় তবে যারা বাণিজ্যিকভাবে ঘৃতকুমারী চাষ করেন তারা ১৫ দিন পরপর চুন পানিতে গুলে স্প্রে করে থাকেন
গোড়া পচা রোগ : গোড়া পচা রোগে গাছের গোড়া পচে যায় পরে গাছ মারা যায় বর্ষাকালে গাছের গোড়ায় পানি জমে থাকলেও বা ভেজা থাকলে গোড়া পচা রোগ হয় ছত্রাকনাশক স্প্রে করলে রোগের হাত থেকে নিস্তার পাওয়া যায়
পোকামাকড়ঘৃতকুমারী গাছে সাধারণত কোনো পোকামাকড় দেখা যায় না তবে মাঝে মাঝে ছাতরা পোকা, জাব পোকা, স্কেল পোকা, লাল মাকড় ইত্যাদির আক্রমণ হতে পারে
ফসল সংগ্রহ ফলন : ঘৃতকুমারী চারা লাগানোর ছয় মাস পর থেকে পাতা তোলা শুরু করা যায় বছরে -১০ মাস পাতা তোলা যায় শীতকালে পাতা তোলা বন্ধ থাকে সাধারণত প্রতি ১৫ দিনে একটি পাতা বের হয় তবে চাষিরা মাসে একটি গাছ থেকে -২টি পাতা সংগ্রহ করে গাছের বৃদ্ধি পাতা বড় হলে প্রতি মাসে দুটি পাতা তোলা যায় পাতা তোলার পর পানিতে ধুয়ে পরিষ্কার করে ছায়ায় শুকিয়ে আঁটি বেঁধে বাজারে বিক্রি করা যায় অথবা ঝুড়িতে কলাপাতা দিয়ে স্তরে স্তরে সাজিয়ে প্যাকেট করে দূরবর্তী বাজারে পাঠানো হয়  স্থানীয় ভাষায় ৫০ থেকে ৫৫ কেজি পাতার এক আঁটি বা বোঝাকে এক গাঁইট বলে এক ট্রাকে ২০০ থেকে ৩০০ গাইট ধরে


1 comment:

  1. Got some important messages about its culture, land and usages. Thanks

    ReplyDelete